ঘটনা ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের। সাতদিন বয়সী একটি ছেলে ছিল ঘরে। সে সময় প্রার্থনা রানী নামে ওই গৃহবধূকে গায়ে আগুণ দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করে তাঁরই স্বামী। প্রায় ১৩ বছর পর ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে স্বামী অশিত কুমার বিশ্বাসকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে দীর্ঘদিন পর রায় হলেও আসামী এখন পলাতক।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিজ্ঞ বিচারক প্রণয় কুমার দাশ এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী অশিত কুমার বিশ্বাস শ্রীপুর উপজেলার খামারপাড়া গ্রামের নিত্যগোপাল বিশ্বাসের ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার প্রফুল্ল গাইনের মেয়ে প্রার্থনা রানী (২৮) স্বনির্ভর বাংলাদেশ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিয়ে ২০০৬ সালের দিকে মাগুরার শ্রীপুরে আসেন। কর্মস্থল শ্রীপুরের খামারপাড়া এলাকায় নিত্যগোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ভাড়া থাকাকানী সময় তার ছেলে অশিত বিশ্বাসের সাথে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে তারা বিবাহ করে এক সাথে বসবাস করতে থাকেন। কিন্তু শ্বশুর বাড়ির লোকদের সাথে বনিবনা না হওয়ায় তারা পাশ্ববর্তী হরিন্দী গ্রামে আব্দুল মান্নানের বাড়ি ভাড়া করে বসবাস করতে থাকেন। তাদের ঘরে একটি কন্যা ও একটি পুত্র সন্তান জন্ম হয়।
এমন পরিস্থিতিতে, পেশায় স্বর্ণকার অশিত বিশ্বাস ও তার পরিবারের সদস্যরা প্রর্থনা বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা এনে দেওয়ার জন্য বার-বার চাপ দিতে থাকে। যৌতুকের দাবিতে চলতে থাকে নির্যাতন। সবশেষ য়ৌতুকের দাবীতে ২০০৮ সালের ০১ ফেব্রুয়ারি রাতে অশিত বিশ্বাস তার স্ত্রী প্রার্থনা রানীকে গায়ে আগুন দিয়ে হত্যা করে। পরদিন ২ ফেব্রুযারি নিহতের মামা গৌতম কর শ্রীপুর থানায় স্বামী অশিত বিশ্বাস ও তার মা নিভা রানীকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সাক্ষি প্রমান গ্রহন শেষে বিচারক অশিত বিশ্বাসকে দোষি সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অশিতের মা নিভা রানীকে খালাশ দিয়েছেন। তিনি জানান, মামলা চলাকালীন সময় আসামী অশিত কিছুদিন হাজত বাস করে। পরে আদালত থেকে জামিন নিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। যে কারনে আসামীর অনুপস্তিতেই বিচারক এ রায় ঘোষণার করেছেন।