মাগুরায় ‘ভাষা সৈনিকের মুখে ৫২’র গল্প শুনি’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে মাগুরা প্রথম আলো বন্ধুসভা। রোববার সকাল ১০টায় শহরের শহীদ সৈয়দ আতর আলী গণগ্রন্থাগার মিলনায়তনে আলোচনা সভায় মূল আলোচক ছিলেন ভাষা সৈনিক খান জিয়াউল হক। সভায় বন্ধুসভার সদস্যরা ছাড়াও শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ভাষা সৈনিকের মুখে ভাষা আন্দোলনের সময়ের গল্প শোনেন।
১৯২৮ সালে জন্ম নেওয়া খান জিয়াউল হক জানান, ভাষা আন্দোলনের সময় যশোর মাইকেল মধুসুদন কলেজে বিএ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন তিনি। এসময় ছাত্র সংসদের সভাপতি হিসেবে ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন তিনি। কিন্তু তাঁর দল মুসলিম লীগ আন্দোলনের ব্যপারে আপত্তি তোলায় দল ছেড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে আন্দোলন করতে থাকেন তিনি। একসময় পুলিশের চাপ ও কলেজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিজ শহর মাগুরায় চলে আসেন খান জিয়াউল হক। মাগুরায় নাসিরুল ইসলাম চান্দু মিয়া সাথে যুক্ত হয়ে আন্দোলন সংগঠিত করেন তিনি। ২১ শে ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ছাত্র হত্যার খবর পেয়ে পরদিন এর প্রতিবাদে শহরের নোমানী ময়দানে ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে মিছিল বের হয়। সেখানে দুই সহযোদ্ধাসহ পুলিশের হাতে আটক হন খান জিয়াউল হক। পরে অবশ্য তাঁদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
সভায় ভাষা আন্দোলন, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেন ভাষা সৈনিক খান জিয়াউল হক। এতো বছরেও ভাষা সৈনিকদের সরকারের পক্ষ থেকে কোন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। ভাষা সৈনিকদের রাষ্ট্রীয় সম্মানে সমাহিত করার আহ্বান জানান খান জিয়াউল হক। আলোচনা সভায় ভাষা সৈনিক ছাড়াও মাগুরা সরকারী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আবু সাইদ মোল্লা, সাংবাদিক খান মাজাহারুল হক, ব্যবসায়ী বাবুল কুরি ও প্রথম আলো প্রতিনিধি কাজী আশিক রহমান বক্তব্য রাখেন।